
“তিতাস একটি নদীর নাম। তার কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ, প্রাণভরা উচ্ছ্বাস। স্বপ্নের ছন্দে সে বহিয়া যায়। ভোরের হাওয়ায় তার তন্দ্রা ভাঙ্গে, দিনের সূর্য তাকে তাতায়; রাতের চাঁদ ও তারারা তাকে নিয়া ঘুম পাড়াইতে বসে, কিন্তু পারে না।তিতাস নদীর তীরে মালোদের বাস। ঘাটে বাঁধা নৌকা, মাটিতে ছড়ানো জাল, উঠানের কোণে গাবের মটকি, ঘরে ঘরে চরকি, টেকো, তকলি, সুতা কাটার, জাল বোনার সরঞ্জাম। এসব নিয়েই মালোদের সংসার।” তিতাস নদীর সাথে যার নাম জড়িয়ে আছে তিনি বাংলার এক বিরলপ্রজ সাহিত্যিক অদ্বৈত মল্লবর্মণ। ছোটবেলা থেকেই তিনি কবিতা-গল্প-নিবন্ধ লেখতেন। তখন ‘মাসপয়লা’, ‘খোকাখুকু’ এবং ‘শিশুসাথী’ পত্রিকায় তাঁর লেখা ছাপা হতো। এভাবেই তিনি পরিচিতি পান লেখক হিসেবে। এছাড়া বারোমাসী গান, এ দেশের ভিক্ষুক জনগোষ্ঠী, পল্লির পালাগান, পাখির গান, বরজের গান, ভাইফোঁটার গান— ইত্যাদি নিয়ে তিনি লিখতেন। গল্প প্রবন্ধ ছাড়াও তিনি তিনটি উপন্যাস লিখেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘তিতাস একটি নদীর নাম’।তিতাস তীরের সন্তান অদ্বৈত মল্লবর্মণ মাত্র সাঁইত্রিশ বছর বেঁচেছিলেন। ১৯১৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গোকর্ণগ্রামের মালো পরিবারে জন্ম আর ১৯৫১ সালের ১৬ এপ্রিল কলকাতায় মৃত্যু। বাংলার অমর কথাসাহিত্যিক অদ্বৈত মল্লবর্মণের একাত্তরতম মৃত্যুদিবসে অনন্ত শ্রদ্ধা।লিখেছেন মহিদুর রহমান।
kingshook